ইতিহাস

কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালী উপজেলার উচ্চ শিক্ষার বড় প্রতিষ্ঠান কুমারখালী সরকারি কলেজ ১৯৭০ সালে স্বাধীনতার অব্যবহিত পূর্বে স্থানীয় বিদ্যেৎসাহী ব্যক্তিবর্গের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় স্থানীয় গড়াই নদীর তটে কুমারখালী কলেজ নামে। নদী ভাঙ্গনে বিলীন হলে ১৯৯৪ সালে বিশিষ্ট সমাজ সেবক ড. আলাউদ্দিন আহম্মেদ সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি বর্গের প্রচেষ্টায় কুমারখালী রেলওয়েস্টেশনের পূর্বদিকে এবং কুষ্টিয়া ঢাকা মহাসড়কের দক্ষিনে সবুজ ছায়া ঘেরা মনোরম পরিবেশে এবং জলাধার বেষ্টিত প্রায় সাত একর জমির উপর এই প্রতিষ্ঠানটিতে আধুনিক অবকাঠামো নির্মিত হয়। কুমারখালী উপজেলা প্রাচীন ঐতিহ্যে লালিত একটি জনপদ। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সাহিত্যিক মীর মোশারফ হোসেন, গ্রামবার্তা সম্পাদক কাঙ্গাল হরিনাথ মজুমদার, ঐতিহাসিক অক্ষয় কুমার মৈত্রেয় সাহিত্যিক সাংবাদিক রায়বাহাদুর জলধরসেন, ওহাবী আন্দলনের সৈনিক কাজী মিয়াজান, স্বদেশী আন্দোলনের বীর বাঘা যতিন, মরমী সাধক বাউল সম্রাট লালন শাহ প্রমুখ স্বদম্ভ্য পদচারণায় গঠিত কুমারখালীর পূর্ণভূমি। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কাপড়ের হাট এবং ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্পের শীর্ষ স্থান এই কুমারখালী। কুমারখালী ব্রিটিশ ভারতের প্রাচীন পৌরসভা (১৮৬৯ খ্রি:) কলেজটি ১৯৭০ সালেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোর এর অধিভূক্তি লাভ করে। ১৯৭৫ সালে কলেজটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক পর্যায়ে উন্নীত হয়। ২০১১ সাল থেকে অত্র প্রতিষ্ঠানে ৭টি বিষয় স্নাতক (সম্মান) কোর্স জাতীয় অধিভূক্তি লাভ করে। উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক (পাস), স্নাতকোত্তর (সম্মান) পর্যয়ে প্রায় পাঁচ হাজার
শিক্ষার্থী এখানে অধ্যয়ন করছে। তা ছাড়া উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয়ের অধীন এইচ এস সি ও বিএ/বিএসএস সহ ০২টি প্রোগ্রাম এবং কারিগরী শিক্ষা বোর্ডের অধীনে বিএমটি শাখায় পড়ার সুযোগ রয়েছে এখানে। ২০১৮ সালে কলেজটি সরকারিকরণ হয় এবং ২০২৪ সালের শুরুতে এ কলেজে প্রথম বারের মত বি.সি.এস শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা প্রফেসর মোল্লা মো. রুহুল আমীন অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করেন এবং তার হাতেই কলেজটি সরকারিকরণ পূর্ণতা পায়। নব মাত্রায় আবির্ভূত হয় কুমারখালী সরকারি কলেজ। শিক্ষক শিক্ষার্থীরা ফিরে আসে শ্রেণি কক্ষে। একাডেমিক ও কো-কারিকুলাম কর্মকান্ডে প্রান চঞ্চল হয়ে উঠে কলেজ প্রাঙ্গন। প্রথম বারের মত রোভার,
রেডক্রিসেন্ট কার্যক্রম শুরু হয় ক্যাম্পাসে। জাঁকজমকপূর্ণভাবে বিভিন্ন জাতীয় দিবস উদযাপন হয় ক্যাম্পাসে। নতুন ইফনিফর্ম পরিহিত ছাত্র ছাত্রীদের পদচারণায় ক্যাম্পাস সর্বদা সুশোভিত। নামাজ ঘর, ক্যান্টিন, ছাত্র সাধারণ কক্ষ,বিজ্ঞানাগার, সম্মান শ্রেণির বিভাগ গুলো নতুন ভাবে সাজানো হয়েছে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সহায়তায় কলেজের অবকাঠামোকাঙ্খিত মানে উন্নীতকরণে সদা ব্যস্ত মাননীয় অধ্যক্ষ। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের লক্ষ্যমাত্রাপূরণে এ অঞ্চলের সন্তানদের দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরে কুমারখালী সরকারি কলেজ বড় অবদান রাখবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
কুমারখালী সরকারি কলেজ
কুমারখালী, কুষ্টিয়া।